ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫ , ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্তক অবস্থানে কোস্ট গার্ড, একমাসে সহস্রাধিক অভিযান

সমুদ্রে ভাসমান গুদাম!

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১৯-০৩-২০২৫ ০১:৪৪:৩২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৯-০৩-২০২৫ ০৫:১৬:৫৩ অপরাহ্ন
সমুদ্রে ভাসমান গুদাম! সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আমদানি করা পণ্য খালাসের পর লাইটার জাহাজকে ‘ভাসমান গুদাম’ হিসেবে ব্যবহার করে তা মজুদ করে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এদিকে আমদানি করা পণ্য খালাসের পর বাজারজাত না করে নদী ও সমুদ্রে জাহাজের মধ্যে ভাসমান গুদামে অবৈধভাবে মজুদ করার বিরুদ্ধে যৌথ সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে কোস্ট গার্ড, নৌ পরিবহন অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীদের পণ্য মজুদের এই অভিনব কৌশল রুখে দিতে গত একমাসে তারা সহস্রাধিক জাহাজে অভিযান পরিচালনা করেছেন। আজ বুধবারেও (১৯ মার্চ) কর্ণফুলী নদী এবং বন্দরের বহিঃনোঙ্গর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বন্দর সূত্র জানিয়েছে, বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমদানি করা পণ্য খালাসের পর তা বাজারজাত না করে লাইটার জাহাজকে ‘ভাসমান গুদাম’ হিসেবে ব্যবহার করে মজুদ করে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু, পণ্য খালাসের পর তা ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় জাহাজে মজুদ রাখা নিষিদ্ধ। তাই, জাহাজে অবৈধ পণ্য মজুদের বিরুদ্ধে  বুধবার সকাল থেকে তৃতীয় দফায় অভিযান চালানো হচ্ছে। ম্যাজিট্রেটের নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড এবং নৌ পরিবহন অধিদপ্তর যৌথভাবে এ অভিযান চালাচ্ছে। এতে সার্বিক সহযোগিতা করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। অভিযান শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সূত্রমতে, রমজানে ভাসমান গুদাম করে দ্রব্যমূল্যের অস্থিতিশীলতা রোধে তৎপর হয়েছে কোস্ট গার্ড। গেল এক মাসে ১০৮৫টি জাহাজে যৌথ অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছে কোস্ট গার্ড। সেই সঙ্গে নৌযানে রাত্রিকালীন নিরাপত্তার জন্য বিশেষ টহল দল নিয়োজিত রেখেছে তারা। ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-চট্টগ্রাম নৌ রূটে চলাচলকারী যাত্রিবাহী জাহাজের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে কোস্ট গার্ড। বাণিজ্যিক জাহাজে চুরি, ডাকাতিসহ অপরাধমূলক কার্যক্রম শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত হয়েছে বলে জানান সেবাপ্রত্যাশীরা।

কোস্ট গার্ড সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের জনগোষ্ঠী তথা দেশের আপামর জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষা, জলদস্যুতা ও বনদস্যুতা দমন, চোরাচালান, মাদক পাচার ও মানবপাচার রোধ, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে নিবেদিত প্রাণ কোস্ট গার্ডের প্রতিটি সদস্য। অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে চলাচলরত নৌযানের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি নিয়মিত রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করা হচ্ছে।

কোস্ট গার্ডের ঢাকা অঞ্চলের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তাকিউল আহসান বলেন, ঈদ সামনে রেখে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানের নিরাপত্তায় চলছে বিশেষ টহল। চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জের পাগলা স্টেশনের দ্রুতগতির ১৮টি স্পিড বোট দিন-রাত নৌপথে টহল দিচ্ছে। বিশেষ করে এ সময়ে নৌযানে ভাসমান গুদাম বানানোর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে মজুদ করে কোনো পণ্যের দাম যেন বাড়াতে না পারে, সেজন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান- বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লাইটার/ট্যাংকারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী ও ভোজ্য তেলবাহী জাহাজ সমূহকে নোঙ্গর এলাকায় ৭২ ঘণ্টার বেশি অবস্থানের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ সকল জাহাজ যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিত করতে কোস্ট গার্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন
 
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ